টক-ঝাল স্বাদের "ইলিশ মাছের আচার" রেসিপি(Illish Macher Achar Recipe In Bengali):

 ইলিশ মাছ খেতে আমরা বাঙালিরা বরাবরই ভালোবাসি।কিন্তু সারা বছর তো আর ইলিশ মাছ পাওয়া যায় না। সারা বছর ধরে যদি ইলিশ মাছ খেতে চান তাহলে এই রেসিপিটি শিখে রাখতে  পারেন - "ইলিশ মাছের আচার"। বানাতেও যেমন সহজ খেতেও হয় অত্যন্ত সুস্বাদু। এই রেসিপিটি একবার বানিয়ে পরিষ্কার কাঁচের জারে সংরক্ষণ করে অনেক দিন ধরে খেতে পারবেন। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক এই " ইলিশের আচার" রেসিপি। 

টক-ঝাল স্বাদের "ইলিশ মাছের আচার" রেসিপি(Illish Macher Achar Recipe In Bengali):

টক-ঝাল স্বাদের "ইলিশ মাছের আচার" রেসিপি

"ইলিশ মাছের আচার" রেসিপির প্রয়োজনীয় উপকরণ :

মাছ ম্যারিনেটের জন্য 

  • ইলিশ মাছ - ৫ টুকরো 
  • লবন - ১ কাপ
  • ভিনিগার - ১ কাপ

আচারের জন্য 

  • সরষের তেল - ১/৩ কাপ
  • পাঁচফোড়ন - ১ চা চামচ 
  • পাঁচফোড়ন ভেজে গুড়ো - ১ চা চামচ 
  • মৌরি ভেজে গুড়ো - ১/২ চা চামচ 
  • শুকনো লঙ্কা - ৪ টি
  • রসুন ভিনিগার দিয়ে বাটা - ১ টেবিল চামচ
  • পেঁয়াজ ভিনিগার দিয়ে বাটা - ১.৫ টেবিল চামচ
  • শুকনো লঙ্কা বিচ ফেলে ভিনিগার দিয়ে বাটা - ১ টেবিল চামচ 
  • সাদা সরষে ও কাঁচা লংকা ভিনিগার দিয়ে বাটা - ১ টেবিল চামচ 
  • ভিনিগার - ১/৪ কাপ
  • চিনি - ১ চা চামচ 


আরও পড়ুন :👉বেগুন ও টক দই দিয়ে সরষে ইলিশ রেসিপি

রান্নার প্রণালী:

মাছ ম্যারিনেট

ইলিশ মাছের টুকরো গুলো ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে জল শুকিয়ে নিন, যেন একটুও জল না থাকে। এবার একটি এয়ার টাইট পাত্রে এক কাপ লবন ও এক কাপ ভিনিগারে ভালো ভাবে মাছ ডুবিয়ে পাত্রের মুখ বন্ধ করে ঘরোয়া তাপমাত্রায় ৭ দিন রেখে দিন। 

আচার রান্না 

৭ দিন পর মাছ গুলো ছোটো টুকরো করে কেটে ৩-৪ বার জল বদলে ধুয়ে ১ ঘন্টা জলে ডুবিয়ে রাখুন। এবার মাছে শুধু হলুদ গুড়ো মাখিয়ে হালকা লাল করে ভেজে নিন। 

কড়াইয়ে বাকি তেলে শুকনো লঙ্কা ও পাঁচফোড়ন ফোড়ন দিয়ে রসুন, পেঁয়াজ ও শুকনো লঙ্কা বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন এবং মাছ গুলো দিয়ে দিন। এবার সরষে বাটা যোগ করুন। 

পুরো রান্নাটা হবে কম আঁচে এবং অল্প অল্প করে ভিনিগার দিয়ে মশলা কষাতে হবে। কোনরকম জল বা লবন ব্যবহার করা যাবে না। মশলা কষে তেল ভেসে উঠলে পাঁচফোড়ন, মৌরি গুড়ো ও চিনি দিয়ে নামিয়ে নিন। 

"ইলিশ মাছের আচার" গরম নয় দুদিন রেখে খেলে তবেই এর আসল স্বাদ পাবেন।

টক-ঝাল স্বাদের "ইলিশ মাছের আচার" রেসিপি

আরও পড়ুন :👉সুস্বাদু "খাসির মাংসের আচার" রেসিপি

রেসিপি নিয়ে টিপস:

  • "ইলিশ মাছের আচার " তৈরির জন্য মাছ কিছুদিন লবন ও ভিনিগারে মজিয়ে রাখলে কাটা নরম হবে, খেতেও সুস্বাদু হয়।
  • আচার তৈরিতে কোনো রকম জল ব্যবহার করা যাবে না। নাহলে আচার তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাবে। 
  • আচার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার জন্য ভিনিগার ব্যবহার করুন এবং ফ্রিজে রাখুন। 
  • আচার তৈরি করে দুদিন পর খেলে আসল স্বাদ পাওয়া যায়। 
  • মাছ যেহেতু আগে থেকেই লবন জলে ডোবানো ছিল তাই রান্নায় কোনো লবন ব্যবহার করা যাবে না। 

 

ইলিশ মাছের আচার রেসিপির উপকারিতা:

দীর্ঘদিন সংরক্ষণযোগ্য – আচার আকারে ইলিশ মাছ অনেকদিন ভালো থাকে, তাই মৌসুম ছাড়াও স্বাদ উপভোগ করা যায়।

ইলিশের স্বাদ বজায় থাকে – আচার করার ফলে ইলিশ মাছের আসল স্বাদ ও ঘ্রাণ অক্ষুণ্ণ থাকে।

পুষ্টিগুণ – ইলিশ মাছ প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন সমৃদ্ধ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

খাবারের রুচি বাড়ায়– ইলিশ মাছের আচার ভাতের সাথে খেলে রুচি বাড়ে এবং খাবার আরও সুস্বাদু লাগে।

সহজে পরিবেশনযোগ্য– রান্নার ঝামেলা ছাড়াই সংরক্ষিত আচার দ্রুত পরিবেশন করা যায়।


উপসংহার:

"ইলিশ মাছের আচার" শুধুমাত্র একটি সুস্বাদু পদই নয়, বরং এটি দীর্ঘদিন ধরে খাবার টেবিলে রসনা তৃপ্তির সঙ্গী হয়ে থাকে। ইলিশের স্বাদ, পুষ্টিগুণ ও সংরক্ষণযোগ্যতার জন্য এটি অনেকের কাছে জনপ্রিয়। ভাতের সাথে এই আচার খেলে খাবারের আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যায়। তাই যারা ভিন্ন স্বাদের আচার পছন্দ করেন, তাদের জন্য "ইলিশ মাছের আচার" এক অনন্য পদ।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
sr7themes.eu.org