"বাঁধাকপির কোপ্তা কারি" রেসিপি।(Cabbage Kofta Carry Recipe In Bengali):
নমস্কার বন্ধুরা। কেমন আছেন সকলে? রান্না গুঞ্জনে আরও একটি রেসিপি নিয়ে আমি হাজির হয়েছি আপনাদের কাছে। আজ আমি শেয়ার করব বাঁধাকপির একটি অসাধারণ স্বাদের রেসিপি। বাঁধাকপি আমরা নিরামিষ বা আমিষ ঘন্ট বা ভাজা বিভিন্ন রকম ভাবে খেয়ে থাকি। তবে আজ আমি দেখাবো "বাঁধাকপির কোপ্তা কারি" রেসিপি। কোপ্তা আমরা বিভিন্ন ধরনের খেয়ে থাকি, তবে একবার বাঁধাকপি দিয়ে এইভাবে কোপ্তা কারি তৈরি করে দেখুন দারুণ লাগে কিন্তু রেসিপিটি। আশাকরি আপনাদেরও রেসিপিটি ভালোলাগবে। তাহলে দেখে নিন রেসিপিটি আমি কিভাবে তৈরি করছি।
"বাঁধাকপির কোপ্তা কারি" রেসিপি।(Cabbage Kofta Carry Recipe In Bengali):
"বাঁধাকপির কোপ্তা কারি" তৈরির জন্য আমাদের যা যা উপকরণ লাগছে:
- বাঁধাকপি - ১ টা ছোটো সাইজের
- পেঁয়াজ কুচি - ২ টি মাঝারি সাইজের
- পেঁয়াজ বাটা - ২ টি মাঝারি সাইজের
- টমেটো বাটা - ১ টা বড়ো সাইজের
- কাঁচা লঙ্কা কুচি - ৪-৫ টি
- আদা বাটা - ১.৫ চা চামচ
- রসুন বাটা - ১.৫ চা চামচ
- কাজুবাদাম বাটা - ৮-১০ টা
- বেসন - ৪ টেবিল চামচ
- জিরে গুড়ো - ১ চা চামচ
- হলুদ গুড়ো - ১ চা চামচ
- ধনে গুড়ো - ১ চা চামচ
- শুকনো লঙ্কা গুড়ো - ১ চা চামচ
- গোটা জিরে - ১/৩ চা চামচ
- তেজপাতা - ২ টি
- এলাচ-লবঙ্গ - ৩ টি করে
- দারচিনি - ২ টি ছোটো স্টিক
- সরষের তেল - পরিমান মতো
- লবন - স্বাদমতো
- চিনি - ১/২ চা চামচ (স্বাদ ব্যালেন্সের জন্য)
- ঘি - ১ চা চামচ
- গরম মশলা গুড়ো - ১ চা চামচ
আরও পড়ুন:👉নিরামিষ বাঁধাকপি" রেসিপি।
এবার দেখে নিন রান্নার প্রস্তুতি পর্ব:
১. প্রথমে কপি গোটা অবস্থায় ধুয়ে নিয়ে গ্রেট করে নিন। কপি হাত দিয়ে চেপে চেপে যতটা সম্ভব অতিরিক্ত জল বের করে ফেলে দিন। একটি বড়ো বাটিতে কপি, ১/২ চা চামচ করে আদা ও রসুন বাটা, ১/২ চা চামচ করে হলুদ ও গরম মশলা গুড়ো , পেঁয়াজ ও কাঁচা লঙ্কা কুচি, বেসন ও স্বাদমতো লবন দিয়ে মেখে একটা মন্ড তৈরি করুন। কপির পরিমান অনুযায়ী বেসন বাড়িয়ে বা কমিয়ে নেবেন।
২. একটি কড়াইয়ে তেল গরম করে ওই মন্ড থেকে অল্প করে নিয়ে গোল গোল কোপ্তার আকারে ভেজে তুলে রাখুন। মাঝারি আঁচ থাকবে। সব কোপ্তা ভেজে নিয়ে কড়াইয়ে ৩-৪ টেবিল চামচ তেল রেখে বাকি তেল তুলে নিন। ওই তেলে গোটা জিরে, তেজপাতা ও গোটা গরম মশলা ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ বাটা ভেজে নিন। পেঁয়াজ একটু ভেজে নিয়ে ১ চা চামচ করে আদা-রসুন বাটা ও টমেটো বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন। মশলা কষে এলে এরমধ্যে কাজুবাদাম বাটা, ১/২ চা চামচ হলুদ গুড়ো, ১ চা চামচ করে জিরে-ধনে-লঙ্কা গুড়ো দিয়ে মশলা ভালোভাবে কষিয়ে নিন। এরসাথে দিয়ে দিন স্বাদমতো লবন ও চিনি।
৩. মশলা কষে তেল ছাড়তে শুরু করলে এরমধ্যে ২ কাপ গরম জল দিন। কোপ্তা অনেকটা ঝোল টেনে নেয়, তাই কোপ্তার পরিমান বুঝে জল দেবেন। ঝোল ভালোভাবে ফুটে উঠলে ভেজে রাখা কোপ্তা ও ঝোলের পরিমানে লবন দিয়ে ৫-৭ মিনিট মাঝারি আঁচে ফুটিয়ে নিন। সবশেষে মোটামুটি ঝোল রেখে ঘি ও ১/২ চা চামচ গরম মশলা গুড়ো দিয়ে নামিয়ে নিন। কারণ ঠান্ডা হলে কোপ্তার ঝোল অনেকটাই টেনে যাবে।
তৈরি হয়ে গেল আমাদের "বাঁধাকপির কোপ্তা কারি" রেসিপি। গরম ভাত, পোলাও বা ফ্রাইড রাইসের সাথে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন:👉মাছের মাথা দিয়ে বাঁধাকপি" রেসিপি।
দেখে নিন রেসিপি নিয়ে কিছু প্রয়োজনীয় টিপস:
১. কোপ্তা তৈরির জন্য বাঁধাকপি গ্রেট করে অথবা ভাপিয়ে নিতে পারেন।
২. কপির পরিমান অনুযায়ী বেসন বাড়িয়ে বা কমিয়ে নেবেন। কাজুবাদামের পরিবর্তে পোস্ত বাটা ব্যবহার করতে পারেন।
৩. কোপ্তা ঝোলে দেবার পর অনেকটা ঝোল টেনে নেয় তাই একটু ঝোল রেখে নামাবেন। কারণ ঠান্ডা হলে ঝোল গাঢ় হয়ে যাবে।
৪. তেল ও ঝালের পরিমান নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী বাড়িয়ে বা কমিয়ে নেবেন।
৫. এই রেসিপিরটি নিরামিষ ভাবে তৈরি করতে পারেন। এক্ষেত্রে কাজুবাদাম ও পোস্ত বাটা ব্যবহার করলে ভালো স্বাদ হয়।
FAQ:
১. কোন বাঁধাকপির তরকারি খেতে ভালো?
উ: সাধারণত সবুজ বাঁধাকপির তরকারি খেতে ভালো হয়।
২. বাঁধাকপি থেকে কী কী খাবার তৈরি করা যায়?
উ: বাঁধাকপি থেকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করা যায় যেমন - নিরামিষ বাঁধাকপির ঘন্ট, রুই, কাতলা বা ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে বাঁধাকপির ঘন্ট, চিংড়ি মাছ দিয়ে বাঁধাকপি, ডিম- বাঁধাকপির রেসিপি, বাঁধাকপির পকোড়া।
এবার জেনে নেবো বাঁধাকপির কি কি উপকারিতা রয়েছে:
১. বাঁধাকপিতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি ও কে, যা আমাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
২. এটিতে কম ক্যালোরি ও ফাইবার থাকায় ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৩. বাঁধাকপি খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্যে করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
উপসংহার:
"বাঁধাকপির কোপ্তা কারি" রেসিপি একটি অভিনব কৌশলে তৈরি সুস্বাদু রেসিপি। একঘেয়ে বাঁধাকপির তরকারি খেয়ে বোর হয়ে গেল এই রেসিপিটি ট্রাই করে দেখুন। তাছাড়া বাঁধাকপিতে রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। এতে রয়েছে ভিটামিন সি ও কে, ফাইবার। তাই রেসিপি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা দেখুন ও ঝটপট একবার বাড়িতে বানিয়ে দেখুন। আশাকরি রেসিপিটি সকলের ভালো লাগবে।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করলাম। আবার আগামীকাল কথা হবে নতুন একটি রেসিপি নিয়ে। সকলে সুস্থ ও ভালো থাকুন। নমস্কার।
