অসাধারণ স্বাদে "মুরগির মাংসের রেজালা" রেসিপি(Chiken Rejala Recipe In Bengali):

নমস্কার বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আমি ভালো আছি। রোজকার মতো আজও আমি আপনাদের কাছে একটা নতুন রেসিপি নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি শেয়ার কর"মুরগির মাংসের রেজালা" রেসিপি। এরআগে আমি "খাসির মাংসের রেজালা" রেসিপি শেয়ার করেছিলাম। আজ দেখাব "মুরগির মাংসের রেজালা" রেসিপি। "রেজালা" একটি মুঘল আমলের রেসিপি, যা মুলত বিরিয়ানি, পোলাও বা রুটি-পরোটার সাথে খুব ভালো মানায়। রেসিপিটি তৈরি করাও যেমন সহজ, খেতেও তেমনই সুস্বাদু হয়। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে রেজালা তৈরি করা হয়ে থাকে। তবে আজ আমি দেখাবো কলকাতা স্টাইলে রেজালা রেসিপি। তাহলে চটপট দেখে নিন "মুরগির মাংসের রেজালা" রেসিপি আর যেকোনো অকেশনে বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন। 

অসাধারণ স্বাদে "মুরগির মাংসের রেজালা" রেসিপি(Chiken Rejala Recipe In Bengali):


অসাধারণ স্বাদে "মুরগির মাংসের রেজালা" রেসিপি


"মুরগির মাংসের রেজালা" রেসিপি তৈরি করতে যা যা উপকরণ লাগছে:

  • মুরগির মাংস - ১ কেজি
  • পেঁয়াজ - ৩ টি বড়ো সাইজের 
  • রসুন বাটা - ১ চা চামচ 
  • আদা বাটা - ১ চা চামচ 
  • টকদই - ২০০ গ্রাম 
  • দুধ - ১/২ কাপ
  • পোস্ত বাটা - ১ টেবিল চামচ 
  • কাজুবাদাম বাটা - ১ টেবিল চামচ 
  • শুকনো লঙ্কা - ৩ টি
  • সাদা গোল মরিচ গুঁড়ো - ১ চা চামচ 
  • গোটা গোল মরিচ - ১০-১৫ টা
  • তেজপাতা - ২ টি
  • দারচিনি - ১ টা স্টিক 
  • সাদা তেল - ৩ চা চামচ 
  • ঘি - ৩ চা চামচ 
  • মাখানা - ১৫-২০ টি (ঐচ্ছিক) 
  • কেওড়া জল - ১ চা চামচ 
  • কেশর -  ১ চিমটি
  • লবন - স্বাদমতো 

রেজালা মশলা তৈরির জন্য -

  • গোটা জিরে, ধনে, মৌরি  - ১/২ চা চামচ করে 
  • ছোটো এলাচ - ৪-৫ টি
  • বড়ো এলাচ - ১ টি
  • জয়িত্রী - ১ টা


আরও পড়ুন:👉রেস্টুরেন্টের স্বাদে সেরা বাটার চিকেন রেসিপি

"মুরগির মাংসের রেজালা" রেসিপির প্রস্তুতি পর্ব:

১. প্রথমে একটি  বড়ো বাটিতে ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখা মাংস নিয়ে তাতে ১/২ চা চামচ করে আদা ও রসুন বাটা, ১ চা চামচ গোলমরিচ গুড়ো, টকদই ও এক চিমটি কেশর দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে রেখে দিন অন্তত এক - দুই ঘন্টা। 

২. অপর দিকে রেজালা তৈরির সব মশলা কড়াইয়ে হালকা গরম করে গুড়ো করে নিন। পেঁয়াজ ১ মিনিট মতো ভাপিয়ে নিয়ে পেস্ট করে নিন। একটি কড়াইয়ে তেল ও ঘি গরম করে তাতে গোটা গোল মরিচ, দারচিনি, শুকনো লঙ্কা ও তেজপাতা ফোড়ন দিন। ফোড়ন থেকে সুন্দর গন্ধ বের হলে পেঁয়াজের পেস্ট দিয়ে দিন। ৫ মিনিট নেড়ে নিয়ে ১/২ চা চামচ করে আদা-রসুন বাটা দিয়ে দিন। ভালো ভাবে কষিয়ে নিন। আঁচ মাঝারি থাকবে। 

৩. মশলা ভালো ভাবে কষে তেল ছাড়তে শুরু করলে ম্যারিনেট করে রাখা মাংস দিন। মশলার সাথে মাংস মিশিয়ে নিয়ে ঢাকা দিয়ে রান্না করুন ১০-১৫ মিনিট। এরপর ঢাকা খুলে কাজু ও পোস্ত বাটা, দুধ, মাখানা আর স্বাদমতো লবন দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে আরও ৫ মিনিট ঢাকা দিয়ে রান্না করুন। 

৪. সবশেষে তৈরি করে রাখা রেজালা মশলা ২ চা চামচ ও কেওড়া জল দিয়ে মিশিয়ে গ্যাস বন্ধ করে ঢাকা দিয়ে আরও কিছু সময় রেখে দিন। 

তৈরি হয়ে গেল আজকের রেসিপি "মুরগির মাংসের রেজালা"। পোলাও, বিরিয়ানি অথবা রুটি, পরোটার সাথে একেবারে জমে যাবে এই রেসিপিটি।

অসাধারণ স্বাদে "মুরগির মাংসের রেজালা" রেসিপি

আরও পড়ুন:👉খাসির মাংসের রেজালা রেসিপি।

প্রণালী তো দেখে নিলেন, এবার দেখে নিন " মুরগির মাংসের রেজালা" রেসিপির কিছু প্রয়োজনীয় টিপস:

১. 'রেজালা' তৈরিতে মাংস যত বেশি সময় ধরে ম্যারিনেট করে রাখতে পারবেন মাংস তত বেশি নরম ও জুসি হবে এবং রান্নাটিও তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। 

২. 'রেজালা' যেহেতু সাদা হয় তাই সামান্য কেশর ব্যবহার করলে রান্নায় হালকা হলুদ রং হয় ও সুন্দর গন্ধ হয়। যদি কেশর না থাকে তবে খুব সামান্য হলুদ ব্যবহার করতে পারেন। 

৩. এই রান্নায় মাখানা ব্যবহার করলে স্বাদ ভালো হয়। যদি দিতে না চান তাহলে না দিলেও হবে। 

৪.  পুরো রান্নাটি চাইলে সাদা তেল বা ঘি দিয়েও করতে পারেন আবার আমার মতো দুটো মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। 


এবার দেখে নিন "মুরগির রেজালা" রেসিপির কিছু তথ্য:

১. "মুরগির রেজালার" ইতিহাস -

এই রেজালা রেসিপিটি মুলত মুঘল ঘরানার রেসিপি। এই রেসিপিটি কলকাতায় আসে 'নবাব ওয়াজেদ আলী শাহ্' - র হাত ধরে। "রেজালা"- শব্দটি এসেছে " রাজিল" থেকে। যার অর্থ - "নিন্মবিত্ত"। মোঘল যুগের কর্মচারীদের খুব প্রিয় একটি খাবার ছিল এই " রেজালা" যা পরবর্তী কালে পরিবর্তিত হয়ে রাজ দরবারের হেঁশেলে জায়গা করে নেয়।

২. "রেজালা" ও "কোরমা"- এরমধ্যে পার্থক্য কী?

"রেজালার" ঝোল সাদা বা সাদাটে হয়। এর ঝোল দই ও দুধের মিশ্রনে তৈরি হয় এবং একটু পাতলা ধরনের হয়।

অপরদিকে "কোরমার" ঝোল হালকা হলদে হয়। এর ঝোল দই , বাদাম, কিশমিশ সহযোগে তৈরি করা হয় এবং একটু ঘন ঝোল হয়।


উপসংহার:

"মুরগির মাংসের রেজালা" রেসিপি একটি মোগল আমলের রেসিপি যা নবাব ওয়াজেদ আলীর হাত ধরে কলকাতায় প্রথম আসে। সহজ পদ্ধতিতে তৈরি অত্যন্ত সুস্বাদু এই রেসিপিটি যেকোনো উৎসবের দিনে বাড়িতে তৈরি করে ফেলতে পারেন। রেসিপি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা দেখুন। 







Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
sr7themes.eu.org